অন্দরের সাজসজ্জা

প্রথম প্রকাশঃ অক্টোবর ২৮, ২০১৬ সময়ঃ ২:০৪ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৩:০১ অপরাহ্ণ

gggনিজের ঘরটা যদি সুন্দর একং সাজানো-গোছানো থাকে, মনের প্রশান্তি বহু গুণে বেড়ে যায়। ঘরের সৌন্দর্য রক্ষায় অন্যতম ভূমিকা রাখে পর্দা। পর্দার নানা রঙ, ডিজাইন ও পর্দায় ঘর সাজানোর খোঁজখবর নিয়ে লেখা চার দেয়াল বিশিষ্ট বদ্ধ ঘরটিতে যদি এক টুকরো মৃদু দখিনা বাতাস এসে উঁকি দেয়, তবে শুধু রোমাঞ্চিতই করে না, শিহরিতও করে মনকে।

কল্যাণপ্রসূ হয়ে জানালা নামক প্রবেশদ্বারে সকালের সূর্যটা যখন উঁকি মারে ক্লান্ত বিছানায়, তখন মনের জানালায় অগণিত অনুভূতি তীব্র করে তোলে শ্রান্ত দেহকে। জানালার কাচের দেয়ালের অস্বচ্ছতার ভেতরে স্বচ্ছ মনের ভাবনাগুলো হয়তো

এলোমেলো হয়, আবার সুশৃঙ্খলও হতে পারে।

জানালা প্রকৃতপক্ষেই কী শুধু আলো-বাতাস বহন করে, না অন্য কিছুর প্রভাব বিস্তার করে তা নিয়ে যুক্তি-তর্কের শেষ হবে না। যারা বাড়িকে একটু অন্যভাবে সাজিয়ে সুন্দর করে তুলতে চান তারা পর্দায় আলাদা বিশেষত্ব আনতে নানা জল্পনা-কল্পনা করে থাকেন।

রঙ কী হবে, ডিজাইনটা কেমন হবে, বাড়ির পরিবেশের সঙ্গে মানাবে তো? যারা পর্দা নিয়ে একেবারে ভাবছেন না, ঘরকে সুন্দর কdddরার জন্য পর্দা নিয়ে একটু ভাবুন।

এতে ঘরের সৌন্দর্য কীভাবে বৃদ্ধি পায় তা ভেবে দেখুন। মানানসই পর্দা নির্বাচন আপনার ঘরের পরিবেশ পাল্টে দেয়। ঘরে আলো-বাতাস চলাচল করার জন্য জানালা প্রয়োজন। আর এই দরকারের দিকে খেয়াল রেখে জানালার পর্দা প্রয়োজন। পর্দার ভিন্নতা রয়েছে। পর্দার ব্যবহার বন্ধ ও খোলা দু’ভাবেই করা যায়।

ঘরকে সতেজ রাখার জন্য জানালা অপরিহার্য। ঘরে বাতাস চলাচল প্রয়োজন_ বললেন রেডিয়্যান্ট ইনস্টিটিউটের কর্ণধার ও ইন্টেরিয়র ডিজাইনার গুলশান নাসরিন চৌধুরী । তার মতে, ‘আপনি কোন ঘরের জন্য কোন ধরনের পর্দা নেবেন তা আগে নির্বাচন করুন। মাথায় রাখবেন ঘরের রঙ, জানালার আকার।

দোকানে হাজারো ধরনের কাপড় বা বানানো পর্দা পাওয়া যায়। আপনার সামর্থ্য অনুযায়ী পছন্দের পর্দাটি কিনতে পারেন। বসার ঘরের পর্দার রঙ ও ডিজাইন বুঝে দেখে কিনুন। কারণ সবার আগে অতিথিদের নজরে আসে বসার ঘরটিই, যা থেকে তারা জানতে পারে আপনার রুচির পরিচয়।

তাই বসার ঘরের পর্দার জন্য অতিরিক্ত খেয়াল রাখুন।’ বাড়তি নজর কাড়তে ঘরের দেয়ালের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে পর্দার রঙ নির্বাচন করুন। আবার ঘরের রঙ যেমন সে রঙের পর্দার কাপড় কিনতে পারেন। কাপড় হিসেবে বেছে নিতে পারেন ভেলভেট, সিল্ক, সার্টিন, জর্জেট অথবা কাতান কাপড়।

বাড়ির আসবাবের রঙ, মেঝের রঙ, ঘরের আকার, দেয়ালের রঙের ওপর ভিত্তি করে পর্দা নির্ধারণ করুন। ঘরের পর্দা ছোট আকৃতির না করে ঝালরের অংশ থেকে মেঝে পর্যন্ত টানতে পারেন। জানালা-দরজায় ভারী পর্দা ব্যবহার করতে পারেন, যাতে ঘরে ধুলোবালি প্রবেশ করতে না পারে।

ঘরের পর্দাগুলো অবশ্যই আপনার পছন্দ অনুযায়ী বা বাড়ির সদস্যদের পছন্দের বিষয়টি খেয়াল রেখে কিনতে হবে। একেক ঘরে একেক রকমের পর্দা লাগানো যেতে পারে। গুলশান নাসরিন চৌধুরী আর বলেন, ‘শীতের সময় সিনথেটিক পর্দা এবং গরমের সময়ে ঘরে মোটা ও সুতি পর্দা ব্যবহার করুন।

bbআসবাব যদি ভারী হয় তবে হালকা পর্দা, সামান্য আসবাব থাকলে ভারী বা দুই স্তরবিশিষ্ট পর্দা লাগানো যেতে পারে। বাইরের ঘরে হালকা রঙ আর ভেতরের ঘরে গাঢ় রঙ ব্যবহার করা যেতে পারে।

এক রঙের বা প্রিন্টেড পর্দা দুটোই বাজারে পাওয়া যায়। রঙ নির্বাচনের জন্য কাঠ রঙ, হালকা খয়েরি, সোনালি, হালকা সবুজ, গোলাপি, নীল, চকোলেট, বাদামি, কমলা, সাদা, হালকা বাদামি, হালকা হলুদ বেছে নিতে পারেন। এ ছাড়াও ঘরের আসবাব ও দেয়ালের রঙের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে গাঢ় বা হালকা রঙ নির্বাচন করুন।

পর্দার রঙে যেমন, তেমনি ডিজাইনেও ভিন্নতা আনা যেতে পারে। দুই বা তিন স্তরের পর্দার প্রচলন আছে। আপনি চাইলে ভিন্নতার জন্য দুই স্তরের করতে পারেন। কাতান শাড়ি বা শাড়ির পাড় কেটে এক রঙের কাপড়ের ওপর লাগাতে পারেন। প্রিন্ট কিংবা প্রিন্ট ছাড়া পর্দা তৈরি করতে পারেন। রোলার সঙ্গে বোতাম দিয়ে ভিন্নতা আনতে পারেন।

উপজাতীয়দের তৈরি কাপড়, ব্লক করা পর্দা এখন বেশ জনপ্রিয়। পর্দার রঙ ভারী কিংবা হালকা নির্বাচন করুন। প্রচলিত ফ্যাশন অনুযায়ী বড় পর্দা ব্যবহার করুন। টিস্যু কাপড় বা নেট জাতীয় কাপড় সঙ্গে আলাদা কাপড় লাগিয়ে পর্দা বানাতে পারেন। এই কাপড়ের ওপর নানা ধরনের আলগা কাপড় লাগাতে পারেন।

llkএতে বৈচিত্র্য আসবে পর্দার মধ্য। শিশুদের মনের দিকে খেয়াল রেখে পছন্দের কার্টুন, রূপকথার কাহিনীনির্ভর পর্দা নিতে পারেন। খাবার ঘরে হালকা রঙের পর্দা হলে ভালো। শোবার ঘরে হালকা গোলাপি, অফ হোয়াইট রঙের হালকা বা ভারি পর্দা বেছে নিতে পারেন। বাথরুমের জন্য হালকা নেট জাতীয় কাপড় ও রঙ নির্বাচন করুন।

একই পর্দা দীর্ঘদিন ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তাই টেকসই কাপড়ের পর্দা কেনা উচিত। সুতি কাপড় না নিয়ে অন্য যেমন সিল্ক, জর্জেট, সিনথেটিক কাপড় হওয়া উচিত। ঘন ঘন ধোয়া যাবে না।

তাই প্রতিদিন হালকাভাবে ধুলো ঝেড়ে নেবেন। ছয় বা পাঁচ মাসে একবার ধোয়া যেতে পারে। নিয়মিত যত্ন নিলে অনেক দিন টিকবে। চাইলে অর্ডার দিয়ে বানিয়ে নিতে পারেন।

গজপ্রতি চেক কাপড়ের দাম পড়বে ৩৫ থেকে ৭০ টাকা, খাদি কাপড় ৬০ থেকে ৮০ টাকা, পাটের কাপড় দাম ৩০ থেকে ৫০ টাকা, সিল্ক কাপড় ৫০ থেকে ৬০ টাকা, রাজশাহী সিল্ক কাপড় ৬০ থেকে ৮০ টাকা, ধুপিয়ান ১০০ থেকে ১৫০, টাঙ্গাইল কাপড় ১২০ থেকে ৩০০ টাকা, সাটিন কাপড় ১৫০ থেকে ৩০০ টাকা। পছন্দ অনুযায়ী পর্দা কিনে নিন আর সাজিয়ে তুলুন নিজের আবাসস্থলটিকে মনের মতো করে।

 

 

প্রতিক্ষণ/এডি/তাজিন

 

 

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

সর্বাধিক পঠিত

20G